eNewsroom India Logo

পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছিল ফয়জান আহমেদকে?

Date:

Share post:

কলকাতা: আইআইটি খড়্গপুর এর ছাত্র ফয়জান আহমেদকে যে খুন করা হয়েছিল তা দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের আগে অবধি জানাই যায়নি। অথচ তার একবছর পরে কলকাতা হাইকোর্টে যা উদ্ঘাটিত হল তা চাঞ্চল্যকর। ফয়জানকে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছিল, ঘাড়ের কাছে ছুরি মারা হয়েছিল, তারপর ঘাড়ের পিছনে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়।

গত ২১ মে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ অজয় গুপ্ত বিস্তারিত অটোপ্সি রিপোর্ট পেশ করেন, যাতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। অতঃপর আদালত বিশেষ তদন্তকারী দলকে (সিট) ফয়জানের মৃতদেহের ঘাড়ের বাইরের ডানদিকের ভিডিও পেশ করতে আদেশ দেন। সিটকে ডাঃ গুপ্তের সঙ্গে আলোচনা করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী, চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ডাঃ গুপ্তকে প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রমাণ জোগাবে এবং সর্বতোভাবে সাহায্য করবে সিট। এই মামলার বিচারপতি অবশ্য বদল করা হয়েছে। এরপর থেকে এই মামলার শুনানি হবে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। বৃহস্পতিবারই এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল তাঁর এজলাসে, কিন্তু মামলাটি শুনানির তালিকায় রাখা হয়নি।

ফয়জানের মা রেহানা আহমেদ ফোনে বললেন “ আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ এবং সিটকে আমার ছেলের খুন নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। একজন মা যদি ন্যায়বিচার না পায়, তার মানে আইআইটিতে কোনো মায়ের সন্তানই নিরাপদ নয়।”

রেহানার আইনজীবী রণজিৎ চ্যাটার্জি জানালেন “ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের বিস্তারিত রিপোর্ট প্রমাণ করে দিল যে আমরা ঠিকই বুঝেছিলাম – এটা পরিষ্কার খুনের কেস। পশ্চিম মেদিনীপুরের সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পুলিস দীনেশ কুমার তাঁর রিপোর্টে উল্লেখ করেছিলেন যে ফয়জানের দেহ রক্তে মাখামাখি অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। এটা ডাঃ গুপ্ত যে দাবি করেছেন তার সত্যতাই প্রমাণ করে। সিট কেন এতদিন ধরে এই লাইনে তদন্ত চালায়নি সেটাও আদালতের খুব গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা উচিত।”

মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জানের পচন ধরে যাওয়া দেহ আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসের হোস্টেল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১৪ অক্টোবর ২০২২ থেকে। দেহ উদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আইআইটি কর্তৃপক্ষ এবং খড়্গপুর পুলিস দাবি করেছিল যে ফয়জান আত্মহত্যা করেছে। তার মৃত্যুর খবর ফয়জানের পরিবারের কাছে পৌঁছবার পর যখন তার বাবা-মা খড়্গপুরে যান এবং মৃতদেহ দেখেন, তখনই তাঁরা দাবি করেন যে ফয়জান আত্মহত্যা করতে পারে না এবং এটি খুনের ঘটনা। কিন্তু প্রথমবার ময়না তদন্তের পরেও খড়্গপুর পুলিস তাদের দাবিতে অনড় ছিল। তবে ময়না তদন্তে ২৩ বছর বয়সী ফয়জানের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল তা প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। তারপর ফয়জানের বাবা-মা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালতই ডাঃ গুপ্তকে নিয়োগ করে, যিনি দ্বিতীয়বার ময়না তদন্ত করার পরামর্শ দেন। সেই ময়না তদন্তে ধরা পড়ে যে ফয়জানের মৃত্যু আসলে খুন। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এর তদন্ত চালানোর জন্য সিট গঠন করেন এবং বলে দেন যে এবার থেকে হত্যা হিসাবে এই মামলার তদন্ত চলবে। কিন্তু কলকাতা পুলিস সিটের তদন্ত আটকাতে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। খড়্গপুর আইআইটিও এই মামলা খারিজ করে দেওয়ার দাবিতে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল। তবে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম আর বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখে।

এ পর্যন্ত সিটের ভূমিকাও আশাব্যঞ্জক নয়। আসামের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ফয়জানের খুনের তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল গতবছর ১৪ জুন এবং এই মামলার গুরুত্ব বিচার করে বিচারপতি মান্থা অভিযুক্তদের নারকো টেস্টেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সিট তদন্ত শুরু করে অক্টোবরে এবং তদন্ত খুবই মন্থর গতিতে এগিয়েছে। এই কারণে কোর্ট সিটকে তিরস্কারও করেছে।

 

এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের একটি অনুবাদ।

 

spot_img

Related articles

नेताओं ने झारखंड की ज़मीन, जनता के हक़ के बदले सौंप दी कंपनियों को- झारखंड जनाधिकार महासभा

झारखंड अपनी 25वीं वर्षगांठ मना रहा है, लेकिन झारखंड आंदोलन के सपने पहले से कहीं ज़्यादा दूर हैं।...

El Fashir Has Fallen — and So Has the World’s Conscience on Sudan

The seizure of the city of El Fashir in North Darfur by the paramilitary Rapid Support Forces (RSF)...

Politics, Power, and Cinema: Author Rasheed Kidwai Captivates Dubai Audience

Dubai: Literature enthusiasts from India and Dubai gathered at the India Club for a memorable evening with celebrated...

The Untamed Soul of Indian Cinema: How Ritwik Ghatak’s Art Still Speaks to Our Times

The World Cinema Project has restored, among other films, Titas Ekti Nodir Naam by Ritwik Ghatak. Martin Scorsese,...