ইনিউজরুম ইন্ডিয়া

কোডারমা: ঝাড়খণ্ডের ‘অসামান্য’ বিধায়ক বিনোদ সিং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিজেপি মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীর সঙ্গে।

সিপিআইএমএল বিনোদ সিং সিপিআইএমএল কোডারমা কোডারমা ক্যান্ডিডেট ইন্ডিয়া ব্লক

বিনোদ সিং এবং অন্নপূর্ণা দেবী

রাঁচি: ঝাড়খণ্ডের কোডারমা লোকসভা আসন এবারের নির্বাচনে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। কারণ এখানে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী এমন একজন যিনি বিধায়ক হিসাবে তাঁর অসামান্য কাজের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যদিকে আছেন রাজ্যের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

কোডারমা প্রার্থী বিনোদ সিং

বহু জল্পনার পর লিবারেশন কোডারমা আসনে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী হিসাবে বিনোদ সিংয়ের নাম ঘোষণা করেছে। বগোদরের তিনবারের বিধায়ক বিনোদের মুখোমুখি বিজেপির অন্নপূর্ণা দেবী। অন্নপূর্ণা নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় একজন রাষ্ট্রমন্ত্রী।

কোডারমা লোকসভার অন্তর্গত ছটি বিধানসভা এলাকা – বগোদর, গান্ডে, জামুয়া, ধানোয়ার গিরিডি জেলার মধ্যে পড়ে। বাকি দুটি – কোডারমা ও বরকাঠ্ঠা হল কোডারমা জেলায়। বরকাঠ্ঠা বিধানসভার কিছু অংশ আবার হাজারিবাগ জেলায়।

১৯৭৭ সাল থেকে কোডারমা লোকসভা আসনে নির্বাচন হচ্ছে। তেরোবারের নির্বাচনে বিজেপি ছবার এই আসন জিতেছে। যদি জনতা পার্টির প্রার্থী ঋতলাল প্রসাদ বর্মা আর বিজেপিতে ফেরত যাওয়া বাবুলাল মারান্ডির একবার নির্দল হিসাবে জয়কেও এর সঙ্গে যোগ করা হয়, তাহলে কোডারমায় বিজেপি বা তার সাথে যুক্ত প্রার্থীরা মোট নবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারের লিবারেশন প্রার্থী বিনোদের বাবা মহেন্দ্র সিং রাজনৈতিক হত্যার শিকার। তার আগে তিনিও বিনোদের মতই তিনবার বগোদরের বিধায়ক হয়েছিলেন। বিনোদ লোকসভায় প্রার্থী হওয়ায় বগোদরের বিধায়ক হিসাবে তাঁর কাজ এবং কোডারমা লোকসভা এলাকায় বিজেপি কতটা উন্নয়ন করেছে তা আলোচিত হবে। স্বভাবতই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণার সঙ্গে বিনোদের কাজের তুলনা চলবে। অন্নপূর্ণা আগে লালুপ্রসাদের পার্টি রাষ্ট্রীয় জনতা দলে ছিলেন এবং সেই দল থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের তিনি আরজেডি ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।

বিনোদের বয়স ৪৮। তিনি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং বাবা মহেন্দ্র খুন হওয়ার পর রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০২২ সালে তাঁকে ‘আউটস্ট্যান্ডিং এমএলএ অফ ঝাড়খণ্ড’ পুরস্কার দেওয়া হয়। এবছর যখন ইডির হাতে গ্রেফতার হবেন বুঝে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন পদত্যাগ করেন, তখন চম্পাই সোরেনের নেতৃত্বে সরকার টিকিয়ে রাখার ব্যাপার লিবারেশনের এই বিধায়ক এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং একাধিকবার জোটের অন্য নেতাদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

ইনিউজরুমকে বিনোদ বললেন “প্রথমত আমি ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত পার্টিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি কোডারমার মানুষকে বলতে চাই, উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর সাথে সাথে সমাজের যে কোনো অংশের প্রতিনিধিত্ব করার কাজও লিবারেশন করেছে। সে প্রবাসী শ্রমিকদের কথা বলাই হোক অথবা দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু আর মহিলাদের ইস্যুগুলো তোলা। লিবারেশন রাস্তা থেকে বিধানসভা পর্যন্ত এঁদের সকলের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার কাজ করেছে। কোডারমা থেকে লোকসভায় আমাদের জেতালে সংসদে এই স্বর আরও জোরদার হবে।

“সবচেয়ে বড় কথা হল, এবারে কোডারমার লড়াই কোনো বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে ইন্ডিয়া জোটের নয়। এবারের লড়াই বিজেপির সঙ্গে কোডারমার মানুষের। বিজেপি ৩০ বছর ধরে কী কাজ করেছে তার জবাব দিতে হবে মানুষের কাছে। কোডারমা এখনো দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোর মধ্যে পড়ে আছে কেন? না স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কোনো উন্নতি হয়েছে, না শিক্ষার ক্ষেত্রে।”

তিনি আরও বলেন “অনেক বড় বড় নামের লোক এখান থেকে সাংসদ হয়েছেন। তাঁদের সকলের চেয়ে আমি নগণ্য লোক। কিন্তু আমি বলতে পারি যে আমি কখনো জনগণের ইস্যুগুলোর ব্যাপারে সমঝোতা করব না এবং কোডারমার মানুষের জন্যে কাজ করে যাব। আমি সংসদে কোডারমার মানুষের জোরদার কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার চেষ্টা করব।”

 

এটি হিন্দিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের একটি অনুবাদ

Exit mobile version